বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং কি এবং তার সুবিধা অসুবিধা

কোনো একটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি তার কর্জ পরিচালনার কোনো অংশ বা পরিসেবা সংক্রান্ত কোনো কাজ অন্য কোনো তৃতীয় কোম্পানির মাধ্যমে সম্পাদন করলে তাকে বহিঃউৎস কারবারী পদ্ধতি বা বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বলে। বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং প্রকৃতপক্ষে আউটসোর্সিং অংশ। যেমন কোকা কোলা। উত্পাদনকারী সংস্থাটি পানীয় তৈরী করার পর বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছে। বিজনেস প্রসেস আউটসোর্স প্রধানত দু-ধরনের (ক) অভ্যন্তরীণ কারবার সংক্রান্ত এবং (খ) বাহ্যিক কারবার সংক্রান্ত। অভ্যন্তরীণ কারবার সংক্রান্ত কাজগুলি হচ্ছে মানবিক সম্পদ, অর্থনৈতিক ও হিসাবনিকাশকরন সংক্রান্ত। বাহ্যিক কাজগুলি হচ্ছে ক্রেতাদের পরিসেবা সংক্রান্ত।

বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং -এর সুবিধা

১. হিসাবরক্ষণে নমনীয়তা: বিপিও (Business Process Outsourcing) পদ্ধতির ফলে হিসাবরক্ষন -এ নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ কোম্পানির খুব সহজেই স্থির ব্যয়গুলিকে পরিবর্তনশীল ব্যয়ে রূপান্তর করতে পারে।

২. পরিসেবা মূল্য: কোম্পানিগুলি তাদের নির্দিষ্ট কাজ করানোর জন্য অন্য কোম্পানির সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট পরিসেবা মূল্য স্থির করে। যার ফলে অহেতুক ব্যয় বৃদ্ধি পায় না।

৩. নির্দিষ্ট কাজে অধিক মনোনিবেশ: এই ব্যবস্থার ফলে কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মচারীগণ কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলিতে অধিক মনোনিবেশ করতে পারে। কারণ বেশকিছু কাজ আউটসোর্সিং -এর মাধ্যমে করিয়ে নেয়। এর ফলে কোম্পানিগুলির পরিকল্পনা ফলপ্রসু হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।

৪. কারবারে গতি আসে: এই ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠানের সংগঠনত নমনীয়তার বৃদ্ধি পায়। কোম্পানির নিজস্ব ক্কমটা ছাড়াও আউটসোর্সিং -এর মাধ্যমে কাজগুলি খুব তাড়াতাড়ি সম্পাদিত হয়। যার ফলে প্রতিষ্ঠানে কাজের গতি বৃদ্ধি পায়।

৫. কম মূলধন প্রয়োজন: যেকোনো কোম্পানি পরিচালনার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত মূলধন। এই মূলধনের বিশাল একটি অংশ স্থির ব্যয়ের জন্য প্রয়োজন। স্থির ব্যয়ের মাধ্যমে যদি স্থায়ী সম্পত্তি ক্রয় করা হয় তাহলে তার যেমন অবচয় ধার্য করতে হয়, তেমনই সেই সম্পত্তি বা যন্ত্র্পাতিটি অপ্রচলিত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু আউটসোর্সিং ব্যবস্থায় এই সমস্ত ভয় নেই। কারণ নির্দিষ্ট ফি-র বিনিময়ে কাজগুলি কোম্পানি সহজেই করিয়ে নিতে পারে।

৬. উত্পাদনশীলতা ও সেবার মানোন্নয়ন: সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের সমস্ত কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারে না। কিন্তু বিপিও-গুলি যে ক্ষেত্রে কাজ করে, সেই ক্ষেত্রে তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ হয়। যার জন্য বিপিওর মাধ্যমে কোনকাজ করলে তার গুনগত মান অবশ্যই উন্নতমানের হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের উত্পাদনশীলতা যেমন বারে তেমনই আবার গুনগত মানও বাড়ে।

৭. দায়বদ্ধতা: প্রতিষ্ঠানগুলি সাধারনত তাদের কাজের কিছু অংশ বিপিওকে দিয়ে করিয়ে থাকে। এর জন্য প্রতিষ্ঠানগুলি বিপিওকে উপযুক্ত ফি প্রদান করে। তাই চুক্তি অনুযায়ী যিদ কাজ না হয় বা কাজের মান খারাপ হয় তাহলে বিপিও প্রতিষ্ঠানের কাছে জবাব দিতে বাধ্য থাকে।

৮. কর্মসংস্থান বৃদ্ধি: বিপিও গুলি কেবলমাত্র দেশীয় সংস্থার হয়ে কাজ করে না, বিদেশী সংস্থার প্রতিনিধি হয়েও কাজ করে। এর ফলে দেশে কর্মসংথান সুযোগ বাড়ে।

বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং -এর অসুবিধা

১. ঝুঁকি: বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং ব্যবস্থার সর্বপ্রধান অসুবিধা হল ঝুঁকি। বাইরের কোনো কোম্পানিকে দিয়ে কোনো কাজ করিয়ে নিলে সেই কাজের গোপনীয়তা রক্ষার বিশেষ ঝুঁকি থেকেই যায়।

২. নিরাপত্তা: কোনো দেশের একটি কোম্পানি অন্য কোনো দেশের কোনো কোম্পানির সাহায্য যদি কোনো কাজ করে তাহলে সেই কাজের নিরাপত্তা যথেস্ট ঝুঁকি থাকে। যেমন – উত্তর আমেরিকার বা ইউরোপের কোনো কোম্পানি কোনো তথ্য তৃতীয় বিশ্বের কোনো কোম্পানি বিশ্লেষণ করে দেয় তাহলে উত্তর আমেরিকার বা ইউরোপের ওই কোম্পানিটির শ্রমিকদের মনোভাব, কাজ করার ক্ষমতা, জ্ঞান সম্পর্কে তৃতীয় বিশ্বের কোম্পানিটি জেনে যায়। যার ফলে কোম্পানিটির কিংবা দেশের স্বধীনতা ক্ষুন্ন হয়।

ব্যাঙ্কের প্রকারভেদ এবং তার বর্ণনা

সমবায় সমিতি কি এবং তার বৈশিষ্ট্য

Leave a comment