মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইন

গ্রামীন বেকার সমস্যার সমাধান করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ২০০৫ সালে একটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনটি জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইন (National Rural Employment Gurantee Act, সংক্ষেপে NREGA) নাম পরিচিত। এই আইন মোতাবেক যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় তাকে জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প। এর ওপর নাম ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প। পরবর্তীকালে এই প্রকল্পের নামকরণ করা হয় মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প।

NREGA প্রকল্পের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ:

১. গ্রামাঞ্চল বসবাসকারী প্রতিটি পরিবারের একজন প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যকে বছরে ১০০ দিন কাজের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে।

২. কাজ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করার ১৫ দিনের মধ্যে কাজ দেওয়া হবে বাসস্থানের ৫ কিলোমিটারের দুরুত্বের মধ্যে।

৩. যদি কাজ না দেওয়া হয় তাহলে দৈনিক বেকার ভাতা দেওয়া হবে। বেকার ভাতার পরিমান হবে নূনতম মজুরির এক তৃতীয় অংশ।

৪. প্রাথমিকভাবে সারা দেশের মধ্যে ২০০ টি জেলায় এই প্রকল চালু করা হয়। পরে এটি সারা দেশে চালু করা হয়।

৫. প্রকল্পের ৯০% ব্যয় নির্বাহ করবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ১০% ব্যয় বহন করতে হবে রাজ্য সরকারগুলিকে।

৬. সামাজিক সম্পদ যেমন রাস্তা নির্মান, পুকুর কাটা, প্রভৃতি উত্পাদনশীল কাজে এই শ্রমিকদের নিয়োগ করা হবে। প্রকল্পগুলি এমনভাবে নির্বাচন করা হবে যেন তা থেকে সমাজ উপকৃত হয় বা পরিবেশ উন্নত হয়।

৭. জেলাশাসক হবেন জেলাস্তরে এই প্রকল্পের প্রধান কার্যবাহী অফিসার। গ্রামস্তরে গ্রাম পঞ্চায়াত তত্বাধানের এই প্রকল্প রূপায়িত হবে।

৮. এই প্রকল্পের সমস্ত হিসাব নিকাশ জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য।

৯. কর্মরত অবস্থায় কোনো শ্রমিকের মৃত্যু হবে workmen’s compensation act অনুযায়ী ক্ষতিপুরুনের দেওয়া হবে। আর কোনো শ্রমিক আহত হবে তাকে বিনামূল্য চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হবে এবং তার দৈনিক মজুরির অর্ধেক ভাতা হিসাবে দেওয়া হবে।

১০. যেখানে কর্মপ্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি সেখানে একের তিন অংশ মহিলা শ্রমিক নিয়োগ করা হবে।

প্রথমত, অনেকে এই মত প্রকাশ করেছেন যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বল্পলা;এ কিছু কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্ভব কিন্তু দীর্ঘকালে এই প্রকল্প বেকার সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। শিল্পক্ষেত্রে বিকাশ না ঘটলে বেকার সমস্যার দীর্ঘকালীন সমাধান সম্ভব নয়।

দ্বিতীয়ত, গ্রামাঞ্চলে অনেক শ্রমিক আছে যারা সারা বছরই বেকার থাকে। তাদের জন্য ১০০ দিনের কাজ যথেস্ট নয়। তাদের জন্য সারা বছর কাজের ব্যবস্থা করা দরকার।

তৃতীয়ত, শুধু একজন সদস্যকে কাজ দেওয়া হবে কেন? সকল কর্মক্ষম সদস্যকেই কাজ দেওয়া উচিত।

চতুর্থত, প্রকল্পের ব্যয়ের সিংহভাগ বহন করে কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু প্রকল্প রূপায়নের ভার রয়েছে রাজ্য সরকারগুলির উপর। কাজেই প্রকল্পের সাফল্য অনেকাংশ নির্ভর করে রাজ্য সরকারের কর্মক্ষতার উপর।

পঞ্চমত, এরূপ প্রকল্প প্রথম গ্রহণ করে মহারাষ্ট্র সরকার। এই প্রকল্পে নানা দুর্নীতি দেখা দেয়। সেই রকম দুর্নীতি যেন এই প্রকল্পে নানা দুর্নীতি দেখা দেয়। সেই রকম দুর্নীতি যেন এই প্রকল্পে দেখা না দেয় তার ব্যবস্থা করা দরকার। সেজন্য বলা হয়েছে যে এই প্রকল্পে কোনো ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে না।

এই প্রকল্প থেকে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে সুফল পেতে হবে এই প্রকল্পকে গ্রামীন পরিকাঠামো নির্মানের কাজে ব্যবহার করতে হবে। পরিকাঠামো উন্নত হলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। উত্পাদনশীলতা বাড়বে বেকারদের দির্ঘ্কালিন ভিত্তিতে কর্মসংস্থানদেওয়া সম্ভব হবে।

সবুজ বিপ্লবের ফলাফল

Leave a comment