সমবায় সমিতি কি এবং তার বৈশিষ্ট্য

ব্যবসায় সংগঠনের ওপর একটি রূপ সমবায় সংগঠন। পরস্পরের উপকার সাধন করার জন্য কয়েকজন ব্যক্তি সমান অধিকার এবং সমান দায়িত্বের ভিত্তিতে কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে তাকে সমবায় সমিতি বলে। সমবায় সমিতি বিভিন্ন অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য গঠিত হতে পারে। যেমন – সমবায় ঋণ দান সমিতি, সমবায় গৃহনির্মাণ সমিতি, সমবায় উত্পাদন সমিতি, সমবায় বিক্রয় সমিতি ইত্যাদি।

অন্যান্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন করা। কিন্তু সমবায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মুনাফা অর্জন উদ্দেশ্য নয়। সমবায় সমিতির সদস্যদের পারস্পরিক উপকার বৃদ্ধি করা বা কল্যাণ সাধন করাই সমবায়ের প্রধান উদ্দেশ্য। অবশ্য সেই উদ্দেশ্য সিদ্ধির জয়ন সমবায়কে কিছুটা মুনাফা অর্জন করতেই হয়। তবে মুনাফাই সমবায়ের একমাত্র লক্ষ্য নয়।

সমবায়ের সমিতির বৈশিষ্ট্যসমূহ

সমবায় সংস্থার কতকগুলি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য লক্ষ্যনীয়

১. সমবায় সমিতিতে অনেক ব্যক্তি মিলিত হয়ে সমবায় সমিতি গঠন করে। অনেকে এক্ষেত্রে মিলিত হওয়ার ফলে নিজেদের আর্থিক অবস্থা উন্নত ও শক্তিশালী করতে পারে। সদস্যদের মধ্যে একতা বজায় থাকে। সদস্যদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অর্থ একত্রিত করে একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব।

২. সমবায় সমিতির সদস্যরা সকলেই সমান। প্রত্যেক সদস্যদের সুযোগসুবিধা এবং সমান অধিকার থাকে।

৩. সমবায় সমিতির কর্জ পরিচলনা গনতান্ত্রিক নীতিতে হয়। সমবায় সমিতির সদস্যরা ভোট দিয়ে একটি পরিচালকমন্ডলী গঠন করেন এবং সেই পরিচালকমন্ডলী সমবায় সমিতির কাজ-কর্ম পরিচলনা করেন। প্রত্যেক সদস্যর ভোটের মূল্য সমান। কোনো সদস্যর কাছে সমবায় সমিতির শেয়ার কম বা বেশি যাই থাক না কেন প্রত্যেক সদস্যর ভোটের মান সমান। এই প্রসঙ্গে যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠান এবং সমবায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করার মতো।

যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে শেয়ার বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করে। শেয়ার ক্রেতারাই যৌথ মূলধনি কোম্পানির মালিক। সেইরকম সমবায় সমিতিও সদস্যদের মধ্যে শেয়ার বিক্রি করে এবং শেয়ার ক্রেতারাই সমবায় সমিতির মালিক। তবে যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক শেয়ার ক্রেতার ভোটের গুরুত্ব সমান নয়। যার শেয়ার মালিকানা যত বেশি তার ভোটের গুরুত্ব তত বেশি। যার শেয়ার যত কম তার ভোটের গুরুত্ব তত কম। কিন্তু সমবায় সমিতিতে প্রত্যেক সদস্যদের ভোটের মূল্য সমান।

৪. সমবায় প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা স্বেচ্ছায় যোগদান করে থাকে এবং ইচ্ছামত কোনো সদস্য সমবায় সমিতি পরিত্যাগ করে বেরিয়ে আসতে পারে।

৫. সমবায় সমিতির সদস্যরা পরস্পরের মধ্যে পরিচিত থাকে এবং তার ফলে তারা যতদুর সম্ভব মিলেমিশে কাজ করে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-মালিক কোনো পার্থক্য থাকে না। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের নৈতিক এবং সাংস্কৃতিক মান উন্নয়নে সাহয্য করে।

মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীন কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইন

সবুজ বিপ্লবের ফলাফল

Leave a comment