খনিজ তেলের রচনা

কয়লা ও লোহার মত খনিজ তেল অতি মূল্যবান তরল পদার্থ। শিল্পোন্নয়নে, পরিবহনে ও সামরিক প্রয়োজনীয় খনিজ তেল গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে। পৃথিবীর শিল্পোন্নত দেশগুলিতে এর চাহিদা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, উন্নতশীল দেশগুলিতেও এর চাহিদা কম নয়। খনিজ তেল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যর উপরই শুধুমাত্র প্রভাব বিস্তার করে না। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও এর প্রভাব অপরিসীম। তাইত খনিজ তেলের আর এক নাম তরল সোনা।

খনিজ তেলের উৎপত্তি

ভূগর্ভস্থ পাললিক শিলাস্তরে সামুদ্রিক ব্যাকটেরিয়া। উদ্ভিদ ও বিভিন্ন প্রকার জৈব কোষ সঞ্চিত হয়ে ভূগর্ভের তাপ ই শিলাস্তরের চাপের ফলে তরল তেল জাতীয় পদার্থে পরিনত হয়। এই তরল জাতীয় পদার্থকে খনিজ তেল বলা হয়। এই তেল কার্বন ও হাইড্রোজেন এর মিশ্রণে গঠিত। শিলাস্তর থেকে এই তেল উত্তোলিত হয় বলে একে শিলা তেল বলা হয়।

পাললিক শিলাস্তরের অবস্থান করে। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের সাহায্য পরীক্ষা করে ভূগর্ভস্থ তেলের সন্ধান পেলে ওই শিলাস্তরের মধ্যে গভীর কূপ খনন করে গ্যাস ও খনিজ তেল পাম্পের সাহায্য উপরে তুলে আনা হয়। তারপর শোধনাগারে নিয়ে গিয়ে শোধন করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পেট্রল, ডিজেল ও কেরোসিন পাওয়া যায়।

তেলের প্রাপ্তিস্থান

পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলেই খনিজ তেল কম-বেশি পাওয়া যায়। যথা – উত্তর ও দক্ষিন আমেরিকার দেশসমূহ, মধ্যপ্রাচ্যর দেশসমূহ, পূর্ব ইউরোপের দেশসমূহ, সুদুর প্রাচ্যর দেশসমূহ, উত্ত্প্র সাগরের খনিজ তেলক্ষেত্র। তেল উত্পাদক উল্লেখযোগ্য দেশগুলি হল সৌদিআরব, ইরাক, ইরান, কুয়েত, ইত্যাদি।

ভারতে খনিজ তেল খুব বেশি পাওয়া যায় না। তাই আমাদের দেশকে অন্য দেশের থেকে খনিজ তেল আমদানি করতে হয়। আমাদের দেশে মুম্বাই হাই সমুদ্রতটে সবচেয়ে বেশি খনিজ তেল পাওয়া যায়। এছাড়াও অরুনাচলপ্রদেশ, তামিলনাডু, অসম, গুজরাট প্রভৃতি রাজ্য তেল পাওয়া যায়।

খনিজ তেলের ব্যবহার

যেদিন থেকে যন্ত্রসভ্যতার সূচনা হয়েছে সেদিন থেকেই খনিজ তেলের ব্যবহারও শুরু হয়েছে। খনিজ তেল শোধন করে পেট্রল, ডিজেল মবিল গাড়ি চালানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। কেরোসিন তেল জ্বালানির কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন রাসায়নিক শিল্পের কাঁচামাল হিসাবে খনিজ তেল ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

খনিজ তেল থেকে বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য পাওয়া যায়। যেমন – ন্যাপথা থেকে মোম, গন্ধক, প্লাস্টিক, রাসায়নিক সার, আঠা প্রভৃতি। তাই হলদিয়া তৈলশোধনাগার কেন্দ্র করে পেট্রো-কেমিকাল শিল্প গড়ে উঠে।

ভূগর্ভে পেট্রোলিয়ামের ভান্ডার অফুরন্ত নয়। খনিজ তেলের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এই তেল হিসাব করে খরচ করা উচিত। কোনো প্রকার অপচয় করা উচিত নয়, কারণ, ইটা সঞ্চিত সম্পদ। সাধারণ কাজে খনিজ তেলের ব্যবহার কমিয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজে ব্যবহার করা উচিত।খনিজ তেল শুধু শক্তির উৎস নয়।

এ থেকে যে সব উপজাত দ্রব্য পাওয়া যায় তাদের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের পেট্রোলিয়ামের ব্যবহার সঠিকভাবে করা উচিত না হলে হয়ত আগামী ৫০ বছরের মধ্যই তা নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে। তাই আমাদের খনিজ তেলের অপচয় বন্ধ করতে হবে এবং বিকল্প শক্তির সাহায্য নিতে হবে।

একটি কলমের আত্মকথা

আমার শখ রচনা

এইডসের রচনা

পণপ্রথা বাংলা রচনা

Leave a comment