এইডস এক কালান্তর ব্যাধি। সম্প্রতি এর বিশ্ববিস্তারি প্রভাব সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। আজ অবধি ও রোগের নিরাময়করি কোনো ওষুধ বা টিকা আবিস্কৃত হয়নি। এমনকি ভবিষতেও আবিস্কারের সম্ববনা কম। বিশেষজ্ঞদের ধারনা, কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত না হওয়া অবধি এ রোগ ক্রমে বেড়েই যাবে।
সুচিপত্র
এইডস কি?
এইডস (AIDS) বলতে বোঝায় বাইরে থেকে আগত কোনো কারণে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পুর্ন নষ্ট হওয়ার লক্ষণ অর্থাৎ নিজের দোষে এক বা একাধিক রোগজীবাণু দেহে প্রবেশের ফলে সে দেহের স্বাভাবিক রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পুর্ন বিপর্যস্ত হওয়া। এই প্রতিরোধ ক্ষমতায় অনুক্ষণ আমাদের রক্ষা করেছে। এ যদি নষ্ট হয়ে যায় তবে নানা ধরনের রোগজীবাণু আক্রমনে বিভিন্ন রোজ ও বিচিত্র ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। এর পরিনতি অবশ্যই মৃত্যু।
এইডসের প্রতিষেধক ও চিকিৎসা
যক্ষা প্রভৃতি রোগ আগে মারণব্যাধি নাম চিহ্নিত ছিল। বর্তমানে যক্ষার ওষুধ আবিষ্কৃত হবার পর যক্ষা একেবারে সেরে যাচ্ছে। কিন্তু ক্যান্সারের পূর্ণ নিরাময় ওষুধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। ক্যান্সারের মতো এইডস -এর ওষুধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। আফ্রিকা-ইউরোপ আমেরিকা এমনকি ভারতেও এইডস-এর আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। বিশ্ববিখ্যাত হলিউড নায়িকা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এশিয়ার বহু দেশে এই মারণব্যাধির ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ এই রোগের প্রতিষেধক হিসাবে শুধু সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, রক্তের মধ্যে দিয়েই এই প্রানের বিস্তৃত ঘটে বলে এ ব্যাপারে খুব সাবধান থাকতে হবে। অবৈধ্য যৌন সংসর্গ বর্জন করতে হবে। সম্পুর্ন নতুন ইঞ্জেকসন সিরিঞ্জ ও সুঁচ ব্যবহার করতে হবে। কোনভাবেই ড্রাগ নেওয়া চলবে না। এইডস রোগাক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা পোশাক ব্যবহার করা চলবে না।
এইডস এর অভিশাপ
এইডস নামক মারণব্যাধির আজ ভয়ংকর অভিশাপের কালো ছায়া বসিতর করে রেখেছে। কোনো ব্যক্তির এইডস হলে ডাক্তাররা তার চিকিত্সা করতে চান না, আর নার্সিং হোম নার্স পাওয়া যায় না। পরিবারের সকলে তাকে দুরে সরিয়ে রাখে। জানাজানি হলে পাড়ার লোক তাকে একঘরে করে রাখে। এইডস রোগাক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি পাড়ার মানুষ নির্মম ব্যবহার করেছে এই ধরনের খবরও শুনা যায়।
উপসংহার
এইডস রোগকে প্রতিরোধ করার উপায় এর বিস্তারের পথে বাধাসৃষ্টি। প্রধান চারটি উপায়ে এ রোগ বিস্তার বন্ধ করা সম্ভব হবে। সেগুলি হল – (ক) যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে (খ) সংক্রামিত ব্যক্তির রক্ত বা রক্তজাত ওষুধের মাধ্যমে (গ) সিরিঞ্জ, সুঁচ ইত্যাদি পরিশোধন না করে একাধিকজনকে ব্যবহার করার ফলে (ঘ) সংক্রামিত নারী থেকে সন্তানে বিস্তৃতির জন্য।
এইডস রোগের দ্রুত বিস্তার এ কোথায় প্রমান করে যে, মানুষ আজ ভোগ বাসনার প্রমত্ত, নিত্যকে ছেড়ে অনিত্যর মোহে ধাবমান। সভ্যতা ও সংস্কৃতির পক্ষেও যেমন লজ্জার কথা মানুষের অস্তিত্ব বজায় রাখার দিক দিয়েও ঠিক তেমনি গুরুতর চিন্তার বিষয়।